জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন আবেদন করে নেয়ার পরে যদি জন্ম নিবন্ধনের কোনরকম ভুল চলে আসে তাহলে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার প্রয়োজন হয়।

আপনি চাইলে ভিন্ন দুটি উপায়ে খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নিতে পারেন। যার মধ্যে থেকে একটি হল, ইউনিয়ন পরিষদের চলে যাওয়া এবং অন্যটি হলো ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে সেটি করবেন সেটা দেখে নেয়া।

আর আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নিতে চান তাহলে এই কাজটি কীভাবে করবেন সেই রিলেটেড যাবতীয় তথ্য এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন

অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনি যদি খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করে নিতে চান, তাহলে সেই কাজটি কিভাবে সম্পন্ন করবেন?

এ কাজটি কিভাবে সম্পন্ন করবেন সেই রিলেটেড যাবতীয় তথ্য এই আর্টিকেলের অতিক্ষুদ্র ভাবে প্রত্যেকটি ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যাতে করে আপনার বুঝে নিতে কোনো রকমের অসুবিধা না হয়।

ধাপ ১ঃ জন্ম নিবন্ধন সার্চ করে নেয়া

একদম সর্বপ্রথম এবং সর্বপ্রধান ধাপ হিসেবে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটা হলো বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের যে ওয়েব পোর্টাল রয়েছে সেটার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সার্চ করে নেয়া।

অর্থাৎ আপনার যে জন্ম নিবন্ধন রয়েছে সেই জন্ম নিবন্ধন, সার্চ করে নেয়া এবং তারপরে সেটা ইনফরমেশনগুলো সত্যতা যাচাই করে নেয়া।

এই কাজটি করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম নিম্নলিখিত লিংকে ভিজিট করতে হবে।

Search

 

উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করে নিলে আপনার প্রথম ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।

ধাপ ২ঃ ইনফরমেশন দিয়ে বক্স ফিলাপ করে নেয়া

এবার আপনি যে জন্ম নিবন্ধন ইনফরমেশন পরিবর্তন করতে চান কিংবা সংশোধন করতে চান, সেই জন্ম নিবন্ধন এর জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে নিচের দুইটি বক্স ফিলাপ করে নিন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

যখনই আপনি দুইটি বক্স যথাযথভাবে ফিলাপ করে নেবেন, তারপরে ” অনুসন্ধান ” বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।

অনুসন্ধান বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিলে জন্ম নিবন্ধন রিলেটেড ইনফর্মেশন আপনি দেখে নিতে পারবেন।

যদি আপনার দেয়া ইনফর্মেশন সঠিক থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন রিলেটেড ইনফর্মেশন দেখতে পারবেন।

ধাপ ৩ঃ সংশোধন করার ইচ্ছা প্রকাশ

যখনই আপনি ইনফর্মেশন পেয়ে যাবেন, তারপরে আপনি যে আসলেই জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে চান সেটি রিলেটেড তথ্য দিতে হবে।

সেজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম, ” নির্বাচন করুন ” নামের যে অপশন দেখতে পারবেন। সে অপশনের উপরে ক্লিক করতে হবে।

এবং তারপরে আপনি আসলেই সে জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন করতে চান, সেটি রিলেটেড মতামত প্রকাশ করতে হবে এবং তাদের সাথে একমত পোষণ করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

যখনই আপনি কন্ফার্ম বাটনে ক্লিক করে দিবেন তখন আপনার সামনে জন্ম নিবন্ধন তথ্য রিলেটেড ইনফরমেশন গুলো চলে আসবে।

এবার আপনি যে সমস্ত ইনফরমেশন পরিবর্তন করতে চান সেগুলো এখান থেকে একনজরে দেখে নিতে পারবেন এবং তারপরেই সেগুলো পরিবর্তনের দিকে নজরআরোপ করতে পারবেন।

ধাপ ৪ঃ জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন

এবার আপনি গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপে চলে আসবেন। আর সেই ধাপটি হল জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধন করে নেয়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায়।

এবার এখানে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন রিলেটেড যাবতীয় ইনফর্মেশন দেখতে পারবেন এবং এখানে যে সমস্ত বিষয়ে সম্পৃক্ত করতে চান, সেগুলো সম্পৃক্ত করতে পারবেন।

এই পেইজের একদম উপরের দিকে আপনি একটি অপশন দেখতে পারবেন, যেখান থেকে আপনি আপনার বিষয়টি নির্বাচন করে নিতে পারবেন।

এই পেইজের একদম উপরের দিকে,” বিষয় ” বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিতে হবে। তাহলে আপনি এখানে প্রায় প্রত্যেকটি অপশন দেখতে পারবেন, যেগুলো পরিবর্তনযোগ্য।

এবার আপনি যে বিষয়টির সংশোধন করে নিতে চান, সেটির উপরে চাপ দিন এবং তারপরে সেই অপশনটা সংশোধন করে নেয়ার প্রায় প্রত্যেকটি বক্স আপনি দেখতে পারবেন।

আমি যেহেতু নাম সংশোধন করে নিতে চাই, সেজন্য নাম এর উপরে ক্লিক করে দিলাম। সেজন্য আমার সামনে প্রায় অনেকগুলো বক্স ওপেন হবে যেগুলোর মাধ্যমে আমি আমার নাম সংশোধনের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।

এবার আপনাকে পুনরায় প্রায় প্রত্যেকটি বক্স ফিলাপ করতে হবে, কাঙ্খিত ইনফর্মেশন দেয়ার মাধ্যমে।

অর্থাৎ আপনি কোন কারণে নাম সংশোধন করতে চান কিংবা আপনার যে নির্দিষ্ট ইনফর্মেশন সংশোধন করতে চান, সেটি কিসের জন্য সংশোধন করতে চান সেই রিলেটেড তথ্য তাদেরকে দিতে হবে।

এবার সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনি যদি আরো তথ্য সংশোধন করতে চান, তাহলে সেটি রয়েছে যাবতীয় তথ্য এই পেজটিতে দেখতে পারবেন।

আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ইনফর্মেশন যথাযথভাবে সংশোধন করে নিন, এবং তারপরে পেজটিকে একটু নিচের দিকে স্ক্রল করুন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

ধাপ ৫ঃ আবেদনকারীর তথ্য দেয়া

যখনই আপনি আপনার প্রয়োজনীয় সংশোধন সম্পন্ন করে নিবেন এবং পেইজটিকে একটু নিচের দিকে স্ক্রল করবেন, তখন এখানে আপনি আবেদনকারীর তথ্য দেয়ার প্রত্যেকটি অপশন পেয়ে যাবেন।

অর্থাৎ যে ব্যক্তি আপনার হয়ে আবেদন করছে কিংবা আপনি যদি আবেদনকারী হয়ে থাকেন তাহলে সেই রিলেটেড যাবতীয় তথ্য পরবর্তী অপশনে চলে যেতে পারবেন।

আবেদনকারী হিসেবে আপনি যদি ব্যক্তির পিতা-মাতা হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার বসিয়ে দিন এবং জন্ম নিবন্ধন নাম্বার বসিয়ে দিতে পারেন।

আবেদনকারী তথ্য হিসেবে যে সমস্ত ইনফরমেশন দেয়ার প্রয়োজন প্রায় প্রত্যেকটি ইনফর্মেশন যথাযথভাবে বসিয়ে দিন।

তাহলেই আপনি পেমেন্ট করার মাধ্যমে আপনার নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।

ধাপ ৬ঃ পেমেন্ট সম্পন্ন করে নেয়া

সমস্ত ইনফরমেশন যথাযথভাবে ফিলাপ করে নেয়ার পরে এবং সর্বশেষে আপনাকে পেমেন্ট করে নিতে হবে।

আপনি কি সমস্ত ইনফরমেশন পরিবর্তন করবেন সেটি উপরে নির্ভর করবে আপনাকে কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে, সেই বিষয়টি।

এবার আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার ফি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য অবগত হতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত চার্টের দিকে লক্ষ্য রাখতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন ফি

সংশোধনের ধরণদেশেবিদেশে
তথ্য সংশোধনের জন্য ফি১০০ টাকা২ ডলার
জন্ম তারিখ ব্যতীত নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা ইত্যাদি ও অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য৫০ টাকা১ ডলার
বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় মূল সনদ বা তথ্য সংশোধনের পর সনদের কপি সরবরাহবিনা ফিসেবিনা ফিসে
বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় সনদের নকল সরবরাহ৫০ টাকা১ ডলার
উপরে যে চার্ট দেয়া হয়েছে সেটাতে জন্ম নিবন্ধন ফি রিলেটেড যাবতীয় তথ্য দেয়া হয়েছে এবং আপনাকে তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে আপনি আপনার নির্দিষ্ট ইনফরমেশন পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে কত টাকা পরিশোধ করবেন।

 

এবার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন ফি সম্পর্কে অবগত হয়ে যাওয়ার পরে, এবার আপনি যদি ডাইরেক্টলি পেমেন্ট করে দিতে চান তাহলে “ফি আদায়” নামের অপশন এর উপরে ক্লিক করে দিতে পারেন এবং তারপরে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে পারেন।

এছাড়াও আপনি যদি চালানের মাধ্যমে পেমেন্ট দিতে চান তাহলে সেটিও করতে পারবেন। তবে আপনি যদি ডাইরেক্টলি পেমেন্ট করে নিতে চান, তাহলে ফি আদায় বাটন এর উপরে ক্লিক করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিন।

যখনই আপনি পেমেন্ট বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিবেন তার পরবর্তী পেজে আপনি নির্দিষ্ট এমাউন্টের টাকা দেখতে পারবেন এবং তারপরে সেটি পরিশোধ করে দিলেই আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন সংশোধনের জন্য তাদের কাছে সফলভাবে সাবমিট হয়ে যাবে।

গুরুত্বপূর্ণ নোটঃ জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে আপনাকে একটি অ্যাপ্লিকেশন আইডি দেয়া হবে। যেটা আপনাকে সযত্নে রাখতে হবে।

যখনই আবেদনপত্র সাবমিট হয়ে যাবে তখন নির্দিষ্ট কিছু দিনের মধ্যেই আপনার জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন হয়েছে কিনা কিভাবে জানব?

আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন আবেদন সংশোধনের জন্য সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফেলেন তাহলে পরবর্তী সময়ে কিভাবে জানবেন আপনার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন হয়েছে কিনা?

এই কাজটি করে নেয়ার জন্য আপনাকে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নিতে হবে এবং জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নেয়া মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন রিলেটেড ইনফরমেশন সম্পর্কে নিশ্চিত থাকতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই রিলেটেড যাবতীয় তথ্য জেনে নেয়ার জন্য আপনি চাইলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন কিংবা আর্টিকেল থেকে সেই রিলেটেড তথ্য জেনে নিতে পারেন।

জেনে নিনঃ জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নেওয়ার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম নিম্নলিখিত লিংক ভিজিট করতে হবে।

Check

 

যখন আপনি উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করে ফেলবেন তখন আপনি নিম্নলিখিত স্ক্রীনশটএর মত একটি পেজ দেখতে পারবেন। যেখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন রিলেটেড ইনফর্মেশন দিতে হবে।

 

এবার আপনি যেহেতু জন্ম নিবন্ধন তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন, সেজন্য ড্রপডাউন মেনু থেকে জন্ম তথ্য সংশোধনের আবেদন অপশনটি সিলেক্ট করে নিতে পারবেন।

যখনই আপনি জন্ম তথ্য সংশোধনের অপশন সিলেক্ট করে নেবেন তখন আপনাকে দুইটি বক্স ফিলাপ করে নিতে হবে।

অ্যাপ্লিকেশন আইডি এবং জন্মতারিখ নামের দুইটি বক্স ফিলাপ করে নিয়ে তারপরে “দেখুন ” বাটন এর উপরে ক্লিক করুন।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম

তাহলে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন রিলেটেড যাবতীয় ইনফর্মেশন দেখতে পারবেন এবং এটাও জেনে নিতে পারবেন জন্ম নিবন্ধন সংশোধন হয়েছে কিনা।

আর উপরে উল্লিখিত উপায়ে আপনি চাইলে খুব সহজেই, জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top