জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম কি? জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করার জন্য খরচ কত টাকা পড়বে কিংবা বাতিল করতে হলে কি রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে সেই সংক্রান্ত তথ্য কি?
অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে আপনি যদি ডুপ্লিকেট জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে চান, কিংবা অন্য যে কোন কারনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করে নিতে চান তাহলে সেই কাজগুলো কিভাবে করবেন?
জন্ম নিবন্ধন বাতিল সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিতভাবে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে কত টাকা লাগে?
জন্ম নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ এর ১৫ (২) ধারায় নির্ধারিত ফি দিয়ে জন্ম নিবন্ধন বাতিল/সংশোধনের আবেদন করার কথা বলা হয়েছে। যেহেতু বিধিমালার ২১ ধারায় জন্ম নিবন্ধন বাতিলের কোন ফি’র কথা বলা নেই। তাই এক্ষেত্রে সংশোধন ফি প্রযোজ্য হবে।
এক্ষেত্রে সংশোধন ফি হিসেবে বা আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে চান, সে ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার জন্য খরচ হিসেবে আপনাকে অবশ্যই ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে কি কি লাগে?
আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে কিংবা অফলাইনের মাধ্যমে যেকোন উপায়ে জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে চান, তাহলে তথ্য হিসেবে যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
- সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রয়োজন হবে। ( যে জন্ম নিবন্ধন আপনি বাতিল করতে চান)
- যে জন্ম নিবন্ধন একাউন্ট বাতিল করতে চান, সেই জন্মনিবন্ধন একাউন্টের যে জন্মতারিখ রয়েছে সেটির প্রয়োজন হবে।
- জন্ম নিবন্ধন ফি হিসেবে অতিরিক্ত ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
- ডুপ্লিকেট বা একাধিক যে জন্ম নিবন্ধন রয়েছে, সেটি প্রমাণ করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত তথ্য যদি আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে আপনি জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন বাতিল করার নিয়ম
এবার আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে চান, তাহলে আপনাকে সর্ব প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল জন্ম নিবন্ধন এর ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।
অর্থাৎ, সর্বপ্রথম ধাপ হিসাবে আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন টি খুঁজে বের করতে হবে যে জন্মনিবন্ধন আপনি ক্যানসেল করতে চান।
সেজন্য জন্ম নিবন্ধন খুঁজে বের করার জন্য সর্বপ্রথম নিম্নলিখিত লিংক ভিজিট করুন।
যখনই উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করবেন, তখন আপনার জন্ম নিবন্ধনের ১৭ ডিজিটের অনলাইন নাম্বার এবং আপনার জন্ম তারিখ দেয়ার মাধ্যমে আপনার জন্ম সনদ অনুসন্ধান করুন।
এর পরবর্তী ধাপ হিসেবে আপনাকে অবশ্যই আপনার নিবন্ধন কার্যালয় নির্বাচন করে নিতে হবে। অর্থাৎ যে কার্যালয় থেকে আপনি জন্ম নিবন্ধন টি আবেদন করেছিলেন।
সেজন্য, যথাক্রমে জন্ম নিবন্ধন কার্যালয় অ্যাড্রেস নির্বাচন করে নিন।
এবার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে; আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন বাতিলের কারণ এবং আবেদনকারীর তথ্য দিয়ে প্রত্যেকটি বক্স ফিলাপ করে নিতে হবে।
আর জন্ম নিবন্ধন আবেদন ডিলিট করার জন্য সাধারণত এখানে একটি কারণই এখন পাওয়া যাচ্ছে, তা হচ্ছে ডুপ্লিকেট নিবন্ধন সনদ।
সে জন্য আবেদন ডিলিট করে নেয়ার জন্য কিংবা ক্যানসেল করার জন্য ডুপ্লিকেট নিবন্ধন সনদ অপশনটি সিলেক্ট করে নিন।
এবং তারপরে আবেদনকারীর তথ্য হিসেবে প্রত্যেকটি বক্স ফিলাপ করে মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিন।
এবার ডান পাশের সাবমিট বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।
আর উপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ধাপ সম্পন্ন করে নেয়ার মানে হল আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
যখনই আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে তখন আবেদন কপি প্রিন্ট করে নিন। অথবা এটিকে পিডিএফ হিসেবে আপনার ডিভাইসে ডাউনলোড করে নিন।
এবার আবেদন করার পরে, আপনি যে অ্যাপ্লিকেশন আইডি পেয়েছেন, সেই অ্যাপ্লিকেশন আইডি সাথে নিন এবং পিডিএফ ফাইলটি প্রিন্ট করে নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা কার্যালয় কিংবা কাউন্সিলর অফিসে জমা দিতে পারেন।
যখনই আপনি তথ্যগুলো জমা দেয়ার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিবেন, তখন আপনার আবেদন করার কাজ একেবারেই সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচনা করা হবে।
আর আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার মানে হল আপনার জন্ম নিবন্ধন বাতিল হওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে।
শেষ কথা: আপনি যদি অনলাইনে মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন আবেদন নাকচ করে দিতে চান কিংবা বাতিল করতে চান, সে ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত বর্ণিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পারবেন, অনলাইনের মাধ্যমে এ কাজটি করা খুবই সহজ এবং লক্ষ্য করলে এটাও দেখা যাবে যে কাজটি যে কেউ করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন বাতিল নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)
জন্ম নিবন্ধন বাতিল করতে কত টাকা লাগে?
আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন আবেদন ক্যানসেল করে দিতে চান, সেক্ষেত্রে আবেদন ফি হিসেবে আপনাকে অবশ্যই ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
অনলাইনের মাধ্যমে নিবন্ধন বাতিল করা যাবে কি?
হ্যাঁ, অনলাইন মাধ্যমে আপনি নিবন্ধন বাতিল করার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন করে নিতে হবে।
